স্পোর্টস ডেস্ক: আগের রাতে শেষ ওভারে রিঙ্কু সিংয়ের টানা ৫ ছক্কায় অবিশ্বাস্য জয়ের রেশই তখনও কাটেনি। এর মধ্যেই আরেকটি ধ্রপদি ম্যাচের স্বাক্ষী হলো আইপিএল। দুর্দান্ত বোলিং, বিস্ফোরক ব্যাটিং, পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচের ভাগ্য, শেষ ওভার আর শেষ বলের চরম নাটকীয়তা, কী ছিল না এই ম্যাচে! শেষ পর্যন্ত লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ম্যাচ জিতে নেয় ১ উইকেটে। সেই জয়ের মূল দুই নায়কের একজন, নিকোলাস পুরানের নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য লাগছে এমন জয়।
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিরাট কোহলির ৪৪ বলে ৬১, ফাফ দু প্লেসির ৪৬ বলে ৭৯ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ২০ ওভারে তোলে ২১২। সেই রান তাড়ায় লক্ষ্ণৌ ৪ ওভারে ২৩ রান তুলতেই হারায় ৩ উইকেট। জয় তখন বহুদূর, পরাজয়ের ব্যবধান সম্মানজনক থাকে কি না, এটাই শঙ্কা।
কিন্তু মার্কাস স্টয়নিস ও নিকোলাস পুরানদের ভাবনা ছিল ভিন্ন। শুরুটা করেন স্টয়নিস। অসাধারণ এক পাল্টা আক্রমণে লক্ষ্ণৌকে খেলায় ফেরান এই অস্ট্রেলিয়ান। অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের সঙ্গে মিলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন স্রেফ ৪০ বলে। সেখানে রাহুলের অবদান ১০ বলে ১০, স্টয়নিসের ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৬৫!
৬ চার ও ৫ ছক্কার ইনিংস খেলে একাদশ ওভারে বিদায় নেন স্টয়নিস। তখনও ৯.২ ওভারে ১১৪ রান লাগে লক্ষ্ণৌর। সেখান থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন পুরান। ক্রিজে গিয়ে দ্বিতীয় বলে ছক্কায় শুরু করেন তার ধ্বংসলীলা।
ওপেন করতে নেমে ২০ বলে ১৮ রান করে রাহুল আউট হন দ্বাদশ ওভারে। কিন্তু পুরানের ব্যাট থেকে বল উড়তে থাকে চিন্নাস্বামীর নানা প্রান্তে। স্রেফ ১৫ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। এবারের আসরের যা দ্রুততম ফিফটি। আইপিএলের সব আসর মিলিয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি। ১৪ বলে ফিফটির রেকর্ড যৌথভাবে লোকেশ রাহুল ও প্যাট কামিন্সের।
পুরান কাজ শেষ করে ফিরতে পারেননি। ১৯ বলে ৬২ করে তিনি বিদায় নেন সপ্তদশ ওভারে। এরপর উত্তেজনার নানা মোড় পেরিয়ে ম্যাচ পৌঁছে যায় শেষ ওভারে, তিন উইকেট নিয়ে লক্ষ্ণৌর যখন প্রয়োজন ৫ রান। সেই ওভারেই দু্ই উইকেট হারিয়ে নাটকীয়তা পৌঁছে যায় শেষ বলে। সেখানে বেঙ্গালোরের কিপার দিনেশ কার্তিকের ভুলে ‘বাই’ রান নিয়ে ১ উইকেটে জয়ের উল্লাসে ভাসে লক্ষ্ণৌ।
ম্যাচের সেসব রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা পরদিনও দোলা দিচ্ছে পুরানের মনে, ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান তা জানিয়ে দেন টুইটারে “গত রাত ছিল স্রেফ অবিশ্বাস্য… ধন্যবাদ বেঙ্গালোর।”
আইপিএলে একটা সময় পুরান ছিলেন ব্যর্থতার প্রতিশব্দ। তবে গত মৌসুম তার বেশ ভালো কাটে। ৩০৬ রান করেন তিনি ৩৮.২৫ গড় ও ১৪৪.৩৪ স্ট্রাইক রেটে। এবার আইপিএলের আগে খুব ভালো ফর্মে ছিলেন না। তবে আইপিএলে আবার দেখা মিলছে বিধ্বংসী রূপের। চার ম্যাচে ১৪১ রান করেছেন ৪৭ গড় ও ২২০.৩১ স্ট্রাইক রেটে!
পুরান ম্যাচ শেষে বললেন, নিজের খেলা নিয়ে কাজ করে আর ক্রিকেট দর্শন বদলে ফেলেই এখন সাফল্যের ছোঁয়া পাচ্ছেন।
“দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারতে পারায় বেশ ভালো অনুভব করতে থাকি। এরপর স্রেফ চালিয়ে গেছি। নিজের খেলা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছিলাম আমি। এই জায়গাটাতেই থাকতে চাই। বছর দুয়েক স্রেফ চেষ্টা করেছি দলকে জেতাতে এবং কেবল হতাশই হয়েছি। এখন আমি খুব ভালো মানসিকতায় আছি। স্রেফ ক্রিকেট উপভোগ করতে চাই। মজা করতে চাই, হাসি মুখে মাঠে নামতে চাই এবং দলের জন্য যা করা দরকার, তা করতে চাই।”
পাঁচ ও ছয়ে নামা স্টয়নিস-পুরানের ঝড়ের পর এ দিন সাতে নেমে ২৪ বলে ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন লক্ষ্ণৌর ‘ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার’ ২৩ বছর বয়সী আয়ুশ বাদোনি। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলেন, এই পজিশনগুলো তাদের চোখে গুরুত্বপূর্ণ বলেই এসব জায়গায় তারা জোর দিয়েছেন।
“টি-টোয়েন্টিতে আমার মতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটিং পজিশন ৫. ৬ ও ৭। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলি এসব পজিশন থেকেই জেতাতে হয়। হ্যাঁ, এই ধরনের বড় টুর্নামেন্টে বেশির ভাগ রান টপ অর্ডার থেকেই আসবে, কিন্তু বড় ম্যাচগুলি জেতাবে এই পজিশনগুলোর ক্রিকেটাররা।”
“এজন্যই আমরা পুরান, স্টয়নিস ও আয়ুশের শক্তির ওপর বিনিয়োগ করেছি। আয়ুশ তরুণ এক ব্যাটসম্যান, যে খেলা শেষ করা এবং শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকা শিখছে। গত মৌসুমে গোটা দুই ম্যাচে এটা করেছে, এবারও করছে। তাকে নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত যে এই পজিশনে আরও ভালো হয়ে উঠছে।”
“দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারতে পারায় বেশ ভালো অনুভব করতে থাকি। এরপর স্রেফ চালিয়ে গেছি। নিজের খেলা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছিলাম আমি। এই জায়গাটাতেই থাকতে চাই। বছর দুয়েক স্রেফ চেষ্টা করেছি দলকে জেতাতে এবং কেবল হতাশই হয়েছি। এখন আমি খুব ভালো মানসিকতায় আছি। স্রেফ ক্রিকেট উপভোগ করতে চাই। মজা করতে চাই, হাসি মুখে মাঠে নামতে চাই এবং দলের জন্য যা করা দরকার, তা করতে চাই।”
পাঁচ ও ছয়ে নামা স্টয়নিস-পুরানের ঝড়ের পর এ দিন সাতে নেমে ২৪ বলে ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন লক্ষ্ণৌর ‘ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার’ ২৩ বছর বয়সী আয়ুশ বাদোনি। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলেন, এই পজিশনগুলো তাদের চোখে গুরুত্বপূর্ণ বলেই এসব জায়গায় তারা জোর দিয়েছেন।
“টি-টোয়েন্টিতে আমার মতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটিং পজিশন ৫. ৬ ও ৭। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলি এসব পজিশন থেকেই জেতাতে হয়। হ্যাঁ, এই ধরনের বড় টুর্নামেন্টে বেশির ভাগ রান টপ অর্ডার থেকেই আসবে, কিন্তু বড় ম্যাচগুলি জেতাবে এই পজিশনগুলোর ক্রিকেটাররা।”
“এজন্যই আমরা পুরান, স্টয়নিস ও আয়ুশের শক্তির ওপর বিনিয়োগ করেছি। আয়ুশ তরুণ এক ব্যাটসম্যান, যে খেলা শেষ করা এবং শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকা শিখছে। গত মৌসুমে গোটা দুই ম্যাচে এটা করেছে, এবারও করছে। তাকে নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত যে এই পজিশনে আরও ভালো হয়ে উঠছে।”