

আহসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিবেদকঃ কুমিল্লার মুরাদনগরে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধারের প্রায় বিশ দিন পেরিয়ে গেলেও এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহ দুটি উদ্ধারের পরেই দৃশ্যমান আলামতের ভিত্তিতে রাবেয়ার পিতা অভিযোগ করে আসছে, তার মেয়ে ও নাতিকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল তারিখে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার নবীয়াবাদ গ্রামের প্রবাসী আবদুল মতিনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (২৬) ও ছেলে আব্দুল্লাহ (০৩) এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধার করার পর রাবেয়ার পিতা ইদ্রিস মিয়া সাংবাদিকদের বলেন মৃত রাবেয়ার পা দুটো মাটিতে লেগে আছে যার ছবি তিনি সবার সামনে দেখান এবং এই অবস্থায় পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মাটিতে পা থাকা অবস্থায় ফাঁসির চিত্র দেখে যে কেউ সহজেই বুঝতে পারবে, মা-ছেলেকে মেরে রশিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো। তিনি আরো জানান, রাবেয়ার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য রাবেয়াকে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছিলো, রাবেয়া নির্যাতন থেকে নিস্তার পেতে আমার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চায়, আমি নিরুপায় হয়ে ধার দেনা করে তিন লক্ষ টাকা দেই, কিন্তু অবশিষ্ট দুই লক্ষ টাকা যোগার করতে পারি নাই বিধায় দিতে পারিনাই সেজন্য তার উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি,ফলে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি তাদের দুজনের মৃত্যুর ঘটনাটি আত্নহত্যা নয় বরং এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
তিনি আরো বলেন, রাবেয়ার শ্বশুর বাড়ি থেকে বিষয়টি আত্নহত্যা বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, মরদেহ উদ্ধারের একমাসের কাছাকাছি হলেও এখনো পর্যন্ত তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ী থেকে কোন খবর নেয়া হয়নি বরং তিনি জানতে পেরেছেন বিষয়টি নিয়ে বারাবারি না করার জন্য হুমকি দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী আব্দুল মতিন ও মৃত রাবেয়ার বিয়ে হয় ৫বছর আগে । তাদের সাংসারে জীবনে তিন বছর বয়সী আব্দুল্লাহ নামে একটি ছেলে সন্তান আছে।রাবেয়ার স্বামী আব্দুল মতিন প্রবাস থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসে গত এক বছর আগে দেশে এসেছিলেন এবং ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। দেশে থাকা অবস্থায়ও তাদের সংসারে শান্তি ছিলোনা।
গত এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ শুক্রবার দিবাগত রাতে রাবেয়া তার নিজ শয়ন কক্ষের একটি তীরের সাথে ছেলেকে নিয়ে একই রশ্মিতে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। এসময় এলাকায় চিৎকার চেচামেচি শুরু হলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ এসে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুচাইতুলি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এই বিষয়ে বাঙ্গরা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত পাওয়ার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে, সেই রিপোর্ট পাওয়া গেল দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।