জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁওঃ সবুজ গাছের কচি পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে লাল রঙের চাইনিজ জাতের কমলা ও হলুদ রঙের দার্জিলিং জাতের কমলা। শীতের শুরুতে এসব কমলা বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকের মনে দোল খাওয়াচ্ছে। আর এই অসাধারণ মুহূর্ত উপভোগ করতে এবং কমলা বাগান দেখতে বাগানে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে শতাধিক ভ্রমণপিপাসুরা। জানাচ্ছিলাম ঠাকুরগাঁও জেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত টাঙ্গন ব্যারেজ কমলা বাগানের কথা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের তত্বাবধানে থাকা রফিকুল ইসলাম বাগানের পরিচর্যা করছেন। ৬ বিঘার কমলা বাগানে ৩০০ টির অধিক মাল্টা ও কমলা গাছ রয়েছে। ভিন্নধর্মী চাষের প্রতি আগ্রহের কথা জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমার বড় ভাই জয়নাল আবেদিন এই বাগান তার এক বন্ধুর পরামর্শে লাগিয়েছেন। শখের বশেই ভাই এই বাগান লাগান। তবে গতবছর বাণিজ্যিকভাবে আমরা বিক্রি করি। এবছর ৫ লাখ টাকা বিক্রির সম্ভাবনা দেখছি।”
জেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৮৬০ জন কৃষক মাল্টা ও কমলা চাষে জড়িত। ইতোমধ্যে ১টি মাল্টা ও ৬০টি কমলা বাগান বড় আকারে গড়ে উঠেছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি সমতল ও উর্বর। ফলে যেকোনো ফসল সুন্দরভাবে চাষ করা যায়। এখানে ধান, গম, আলু, মরিচ, পাট চাষের পাশাপাশি কমলা ও মাল্টা চাষে কৃষকেরা অধিক ঝুকছে। সমতল ও উর্বর ভূমি হওয়ায় পাহাড়ি এই ফল চাষে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকছে।
এসব ফসল চাষে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষিত যুবকেরা একধাপ এগিয়ে আছেন।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ের জমি সমতল এবং উর্বর। এখানে যেকোনো ধরনের ফসল ব্যাপক উৎপাদন হয়। অন্যান্য জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও জেলায় শীত অনেক বেশি থাকে এবং মাটি অম্লীয় হওয়ায় এখানে কমলা চাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে।”
বাগানের মূল মালিক জয়নাল আবেদিন জানান, ” আমার একটি বড় বাগান করার স্বপ্ন ছিলো। এক বন্ধুর পরামর্শে মাল্টা ও কমলা গাছ রোপন করি। গতবছর প্রায় দেড় লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি করি। আমার বাগানে মাল্টা ও কমলার পাশাপাশি ড্রাগন, বাউকুল ও পেপের গাছও রোপন করে সমন্বিত চাষাবাদ করছি। বাগানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় আমি খুশি।”