আশরাফুল বারী সজীব (হবিগঞ্জ প্রতিনিধি): দেশে বিপন্ন কালোঘাড় খরগোশের সন্ধান পাওয়া গেছে। আইইউসিএন-এর তালিকায় এটি সারাদেশেই বিপন্ন। দুটি প্রজাতির খরগোশের মধ্যে কালোঘাড় খরগোশের অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত সাতছড়িতেই দেখা মিলল।
দেশে এক সময় প্রচুর পরিমাণ বন্য খরগোশ দেখা যেত। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে বুনো খরগোশদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এ কমে যাওয়াকে কয়েকটি বিশেষ কারণ হিসাবে উল্লেখ করছেন গবেষকেরা। শিকার, প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস, খাদ্যসংকট প্রভৃতি কারণে ধারাবাহিকভাবে এর সংখ্যা কমছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে, দেশে এই প্রথম ‘কালোঘাড় খরগোশ’ ক্যামেরা-ট্রাপে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে পাওয়া গেল। সাদা-কালো ছবিটি ক্যামেরা-ট্রাপ থেকে ধারণ করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ও বন্যপ্রাণী গবেষক মুনতাসির আকাশ বলেন, বাংলাদেশের দুটি খরগোশ প্রজাতির মধ্যে একটি প্রজাতি হলো ‘কালোঘাড় খরগোশ’। এটিকে ‘কালোঘাড় শশক’ও বলা হয়। ইংরেজিতে ইষধপশহধঢ়বফ ঐবৎব বলা হয়। এর অস্তিত্ব দেশে মারাত্মক হুমকির মুখে। ২০১৫ সালে প্রজাতিটিকে ‘বিপন্ন’ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, এগুলো চা বাগান এলাকায় রয়েছে। তবে আগের চেয়ে সংখ্যায় কম। সিলেটের চা বাগান ছাড়াও এ খরগোশগুলো পঞ্চগড়েও পাওয়া যায়। এছাড়াও রাজশাহীর চরগুলোয় পাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। নদীর চরগুলোয় ঘাস খেয়ে বেঁচে থাকে। তবে সংখ্যায় একদমই কম।
ক্যামেরা-ট্রাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই কালোঘাড় খরগোশের ছবিটি সম্প্রতি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর বন থেকে রাতের অন্ধকারে ক্যামেরা-ট্রাপে তোলা। আমরাও বুঝলাম না, বনের এত ভেতরে এসে সে কী করছে। কারণ, ওরা গভীর বনে কখনোই থাকে না। বনের আশপাশে বেশি বিচরণ করে।
এ গবেষক আরও বলেন, এই প্রজাতির খরগোশগুলো বনের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে ‘টেরিটরি’র বিস্তার ঘটায় বা তার এলাকা সে নিজে নিয়ন্ত্রণ করে। অন্য কোনো খরগোশকে সে সেখানে ঢুকতে দেয় না। এই খরগোশের কানগুলো অনেক লম্বা। কিন্তু আমাদের দেশে আরও এক প্রজাতির খরগোশ রয়েছে, যার কানগুলো ছোট। এর নাম ‘আসামি খরগোশ’। এ প্রজাতিটি অতি বিরল।