অনলাইন ডেক্স: রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের সংখ্যা নিয়ে একমত নন ব্যবসায়ী ও মার্কেট সমিতি। সমিতি বলছে, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা দুই হাজর ৯৬১টি। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই হাজার ৬০০টি দোকান ছিলো।
তবে, দোকানের সংখ্যা নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও বুধবার থেকেই অস্থায়ীভাবে হলেও বঙ্গবাজারে দোকান চালু করতে চায় সিটি করপোরেশন। যাতে করে ঈদের আগে সামান্য হলেও হাতে কিছু টাকা পেতে পারেন ব্যবসায়ী ও দোকানিরা।
মঙ্গলবার বঙ্গবাজারে গিয়েই দেখা যায়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ দোকানের সংখ্যা নিয়ে বাকবিতন্ডতায় ঝড়িয়ে পরেছে দোকান মালিক সমিতি আর ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দোকানের সংখ্যা নিয়ে সিটি করপোরেশনের কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে।
বঙ্গবাজারের এক ব্যবসায়ী দাবি করলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা দুই হাজার ৬০০টি। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের কাছে তালিকা দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৯৬১টি টির। ব্যবসায়ীদের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা বেশি দেখানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়।
তবে বঙ্গবাজার মার্কেট সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক বলছেন, তালিকায় কোন ভুল হয়নি। তবে কিভাবে তালিকা করা হলো, তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি মার্কেট সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক। একপক্ষের দাবি, এর মধ্যে রয়েছে কোন দুরভিসন্ধি।
এদিকে সকাল থেকেই চলেছে ধ্বংস স্তুপ সরিয়ে নেয়ার কাজ। সেই সঙ্গে জোরেশোরে চলছে অস্থায়ী দোকান নির্মাণ কাজ। সামনের অংশে বালু ও ইট বসানোর কাজও প্রায় শেষ। সামনের অংশ শেষ হবার পরই পেছনের অংশটি মেরামত করা হবে। দ্রুত কাজ শেষ করতে শ’খানের শ্রমিক কাজ করছে পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারে।
পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে ইট-বালি বিছানো হবে। এরই মধ্যে ৪০ গাড়ি বালি ফেলা হয়েছে। বিছানো হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার ইট। পুরো এলাকায় প্রায় ২.৫ লাখ ইট বিছানো এবং প্রায় ১৫০ গাড়ি বালি ফেলা হবে জানা গেছে। এই কাজ মঙ্গলবারের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে সিটি করপোরেশনের।
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হুদা বলেন, অস্থায়ীভাবে চৌকি পদ্ধতিতে বুধবার থেকে বেচাকেনা শুরু হবে। ব্যবসায়ীদের বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। কারণ মালিক নয়, ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব দিতে চান তারা। এখানে যারা পণ্য বিক্রি করছিলেন তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ঋণ করে এখানে লগ্নি করেছিলেন। আগুনে সব হারিয়েছেন।
এখন পর্যন্ত দুই কোটির বেশি টাকা অনুদান ও সাহায্য সহযোগিতা হিসেবে এসেছে উল্লেখ করে নাজমুল হুদা বলেন, দোকান মালিক বা পজিশন মালিক অথবা বরাদ্দ করা মালিক যেই হোক না কেন, ঈদের আগে আমরা ব্যবসায়ীদেরই গুরুত্ব দিতে চাই। পুর্নবাসন ও ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদানের বিষয়টি পরে সমন্বয় করা হবে।
গেলো চার এপ্রিল ভোর ছয়টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা। প্রায় সাড়ে ছ’ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তার আগেই সব কিছু আগুনে ছাই।
আগুনের তীব্রতা এতোটাই বেশি ছিলো যে আশপাশের মার্কেটগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই আগুনে আশপাশের সাতটি মার্কেটের প্রায় পাঁচ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক বঙ্গবাজারেই পুড়েছে প্রায় তিন হাজার দোকান।