ডেস্ক রিপোর্টঃ নোয়াখালীর হাতিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসানের (৩৯) ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বুধবার সকাল থেকে ওই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আজ দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়ের সব কটি কক্ষেই তালা ঝুলছে। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মবিরতি পালনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) মো. মোসলে উদ্দীন।
মোসলে উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীর ওপর হামলার দুই দিন পরও এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া অন্য আসামিদের কাউকে এখনো শনাক্ত কিংবা আইনের আওতায় আনতে পারেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও অবহিত করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে এই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন। কারণ, একজন সহকর্মী আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁরা দপ্তরে বসবেন, এটা হতে পারে না।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মবিরতির বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে নিরাপত্তার হুমকির কারণে সেখানে কর্মরত ব্যক্তিরা কিছুটা চুপচাপ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁকে জানানো হয়েছে।
গত সোমবার রাত আটটার দিকে হাতিয়া উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়কে একদল দুর্বৃত্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসানের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুলের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে গুরুতর আহত করে। এ সময় তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
হামলার শিকার কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, তাঁর ওপর ওই হামলার ঘটনায় উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ ছাকায়েত হোসেন জড়িত রয়েছেন। কারণ, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষণের জন্য অবৈধভাবে শিক্ষকদের বাছাই এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। এতে ছাকায়েত ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে নানা হুমকি দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে হামলা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ ছাকায়েত হোসেনের বক্তব্য জানার জন্য তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হামলার পর ছাকায়েত হোসেন গা ডাকা দিয়েছেন।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ ছাকায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এখন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।